প্রেম-বিয়ে করে এক পুরুষে থিতু হওয়াটা নারীর স্বভাব। আর পুরুষেরা যেন জাত খেলোয়াড়। মাঠজুড়ে দৌড়ায়। এমন ধারণা অনেকের মধ্যেই রয়েছে। কিন্তু তা কতটুকু সঠিক? পুরোপুরি নয়। এমনটাই বলছে সাম্প্রতিক এক সমীক্ষা। নারী ও পুরুষের সঙ্গী নির্বাচন নিয়ে দীর্ঘ দিনের প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে নয়া এই সমীক্ষা।
গবেষকেরা দাবি করছেন, সঙ্গিনীর সঙ্গে পুরুষের থিতু হওয়ার বিষয়টি আংশিকভাবে প্রাচুর্য ও প্রাপ্তির ওপর নির্ভরশীল। জীবনসঙ্গী হিসেবে নারীকে যেখানে সহজেই পাওয়া যায়, সেখানে পুরুষেরা অনেক ক্ষেত্রে একাধিক নারীর দিকে ঝোঁকেন।
অন্যদিকে, নারীর সংখ্যা কম হলে পুরুষ এক নারীতেই খুশি থাকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একদল গবেষক তাঁদের গবেষণার ফলাফলের ভিত্তিতে এই তথ্য প্রকাশ্যে এনেছেন। রয়াল সোসাইটি ওপেন সায়েন্স ম্যাগাজিনে এই নিয়ে একটি লেখাও প্রকাশিত হয়েছে।
সংবাদসংস্থা সূত্রে খরব, গবেষকেরা দাবি করেন, গায়ানার দক্ষিণ-পশ্চিমে মাকুশি উপজাতীয় এলাকায় প্রায় ১৩ হাজার শিকারি, মৎস্যজীবী ও কৃষকের উপর একটানা ১৬ মাস ধরে গবেষণা চালিয়ে এই তথ্য উঠে এসেছে। নৃবিজ্ঞানী রায়ান স্ক্যাচ এই গবেষণা দলের নেতৃত্ব দেন। তিনি ও তাঁর স্ত্রী জ্যাকুই ২০১০ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত মাকুশি লোকজনের ১৮ থেকে ৪৫ বছর বয়সী ৩০০ নারী-পুরুষের সাক্ষাৎকার নেন। রায়ান স্ক্যাচ বলেন, ‘নারীর সংখ্যা কম থাকলে পুরুষ এক নারী নিয়েই দীর্ঘ দিনের সম্পর্কে কমিটেড থাকে।’
গবেষণায় দেখা গিয়েছে, বহুগামিতার ক্ষেত্রে পারস্পরিক জোগান ও চাহিদার বিষয়টি নির্ভরশীল। একজন পুরুষের হাতের নাগালে নারীর সংখ্যা বেশি থাকলে তাঁর চিত্ত বেশি চঞ্চল হয়ে ওঠে। তখন একাধিক সম্পর্ক গড়ার ব্যাপারে ঝোঁকেন পুরুষটি। আর নারীর সংখ্যা কম থাকলে পুরুষ একজন সঙ্গীর সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি সম্পর্কে জড়িয়ে থাকতেই আগ্রহী হন। যখন নারীর সন্ধান পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে, তখন সবচেয়ে ভালো একজনের সঙ্গে ঘর করাই পুরুষেদের চাহিদা।
নারীদের ক্ষেত্রেও বিষয়টি খানিকটা আলাদা। কোনও পুরুষ যখন নারীর প্রত্যাশা অনুযায়ী চলতে পারেন না, তখন পছন্দের মানুষ বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে নারীরা অনেক সুযোগ তৈরি করতে পারেন।
তবে গবেষকদের পরামর্শ, শেষ পর্যন্ত এই গবেষণা সব সম্প্রদায় বা গোষ্ঠীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নাও হতে পারে। বিষয়টি পারিপার্শ্বিক সামাজিক অবস্থা, আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি উপরেও নির্ভর করে।
পুরুষ যখন এক নারীতেই খুশি থাকে
previous post